বরল জুভেনাইল প্রাইমারী সিসটেমিক ভাসকুলাইটিস  


বিবরণ 2016
diagnosis
treatment
causes
Rare Juvenile Primary Systemic Vasculitis
বরল জুভেনাইল প্রাইমারী সিসটেমিক ভাসকুলাইটিস
পলিআরটেরাইটিস নডোসা, টাকাইয়াসু আরটেরাইটিস, আনকা এসোসিয়েটেড ভাসকুলাইটিসঃ গ্রানুলোমেটোসিস উইথ পলিএনজাইটিস এবং মাইক্রোসকপিক পলিএনজাইটিস।, মস্তিষ্কের প্রাইমারী এনজাইটিস
evidence-based
consensus opinion
2016
PRINTO PReS
ভাসকুলাইটিস কি
রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা
নিত্যদিনের জীবন
পলিআরটেরাইটিস নডোসা
টাকাইয়াসু আরটেরাইটিস
৬. আনকা এসোসিয়েটেড ভাসকুলাইটিসঃ গ্রানুলোমেটোসিস উইথ পলিএনজাইটিস এবং মাইক্রোসকপিক পলিএনজাইটিস।
মস্তিষ্কের প্রাইমারী এনজাইটিস
অন্যান্য ভাসকুলাইটিস এবং এই টাইপের কন্ডিশন



ভাসকুলাইটিস কি

ইহা কি?
ভাসকুলাইটিস হল রক্তনালীর প্রদাহ। এর অন্তর্ভূক্ত অনেক রোগ আছে। প্রাইমারী বলতে বোঝায় শুধুমাত্র রক্তনালীর রোগ। ভাসকুলাইটিস এর শ্রেনীবিন্যাস নির্ভর করে রক্তনালীর আয়তন এবং টাইপ এর উপর। এর বিভিন্ন ধরন আছে মৃদু থেকে শুরু করে জীবননাশকারী পর্যন্ত ‘বিরল’ বলতে বোঝায় এই ধরনের রোগ শিশুদের মধ্যে খুব কমন না।

ইহা কতটা সাধারন?
কিছু সাধারন প্রাইমারী ভাসকুলাইটিস দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। হেনক শনলেইন পারপুরা এবং কাওয়াসাকি ডিজিস, অন্যান্যগুলো বিরল এবং সেগুলোর ক্রমবন্টন জানা নাই। মাঝে মাঝে বাবা মা রোগটা ধরার আগে নামটাই জানতো না। হেনক শনলেইন পারপুরা এবং কাওয়াসাকি ডিজিস পৃথকভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

এই রোগের কারণ কি? এটা কি বংশগত? নাকি সংক্রামক? এটা কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়?
প্রাইমারী ভাসকুলাইটিস সাধারনত পরিবার থেকে আসেনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি পরিবারে একজনই আক্রান্ত হয় এবং অন্যান্য ভাইবোন আক্রান্ত হয়না। বিভিন্ন কারনেই এই রোগটা হতে পারে। এটা মনে করা হয় যে, বিভিন্ন জীন, সংক্রামক (প্রভাবক) এবং পরিবেশগত কারনে এই রোগ হতে পারে।
এই রোগগুলো সংক্রামক নয়, প্রতিরোধ বা প্রতিকার করা যায়না, কিন্তু নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। মানে বোঝায় রোগটা সচল থাকবেনা এবং লক্ষণগুলো চলে যাবে। এই অবস্থাকে বলে ‘রেমিশন’।

ভাসকুলাইটিস এ রক্তনালীতে কি পরিবর্তন হয়?
শরীরের ইমিউনো সিস্টেম দ্বারা রক্তনালী ফুলে যাবে এবং কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং জমাটিকৃত রক্ত রক্তনালীতে লেগে থাকে। সম্মিলিতভাবে রক্তনালী সরু এবং বন্ধ হয়ে যায়।
প্রদাহদানকারী কোষগুলো রক্তনালীর গায়ে লেগে রক্তনালী এবং আশেপাশের টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। টিস্যু বায়োপসি করে আমরা তা বুঝতে পারি।
রক্তনালী লিকি হয়ে যায়, রক্তনালী থেকে ফ্লুইড আশেপাশের টিস্যুতে গিয়ে ফুলে যায়। এর ফলে এই ধরনের রোগে বিভিন্ন ধরনের র‌্যাশ এবং চামড়ার পরিবর্তন দেখা যায়।
সরু এবং বন্ধকৃত রক্তনালীতে রক্তপ্রবাহ কমে যায়, অথবা হঠাৎ করে ভেঙ্গে গিয়ে রক্তপাত হতে পারে, এতে টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেসব রক্তনালী ভাইটাল অঙ্গগুলোকে সাপ্লাই দেয় যেমন মস্তিষ্ক, কিডনী, ফুসফুস, হৃৎপিন্ড সেগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সিসটেমিক ভাসকুলাইটিস সাধারনত প্রদাহসৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান তৈরি করে, এতে জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ ছাড়াও, বিভিন্ন এবনরমাল পরীক্ষগারের টেস্ট ফোন- ইরাইথ্রোসহিট সেডিমেনটেশন রেট (ই.এস.আর) এবং সি রিয়াকটিভ প্রোটিন তৈরি করে। বড় রক্তনালীর সমস্যা আমরা এনজিওগ্রাফি করে বুঝতে পারি।


রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা

ভাসকুলাইটিস কয় ধরনের আছে? এর শ্রেনীবিন্যাস কেমন?
রক্তনালীর সাইজের উপর শিশুদের ভাসকুলাইটিস এর শ্রেনীবিন্যাস নির্ভর করে। বড় রক্তনালীর ভাসকুলাইটিস এটাও এবং এর প্রধান শাখাগুলোকে আক্রান্ত করে। মাঝারি ভাসকুলাইটিস যেসব রক্তনালী রক্তনালী কিডনী, অন্্র, মাথা অথবা হৃৎপিন্ডকে সাপ্লাই দেয় তাদেরকে আক্রান্ত করে। যেমন পলিআরটেরাইটিস, নডোসা, কাওয়াসাকি ডিজিস) ছোট আকারের ভাসকুলাইটিস একেবার ছোট রক্তনালী, রক্তজালিকাকে আক্রান্ত করে যেমন-হেনক শনলেইন পারপুরা, (কিউটেনিয়াস লিউকোসাইটোক্লাসটিক ভাসকুলাইটিস)

এর প্রধান লক্ষণগুলো কি কি?
রোগের লক্ষন নির্ভর করে কতগুলো রক্তনালীর প্রদাহ হয়েছে তা উপর এবং রক্তনালীর অবস্থানের উপর (প্রধান অঙ্গ যেমন মস্তিষ্ক, হৃৎপিন্ড, চামড়া অথবা মাংস) এবং কতটুকু রক্তপ্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার উপর। এটা হতে পারে কিছুসময়ের জন্য রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়া অথবা পুরোপুরি রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে টিস্যুতে অক্সিজেন এবং পুষ্টি কমে যাওয়া। এটা আস্তে আস্তে টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্থ এবং দাগের তৈরি করে। যতটুকু অঙ্গ এর কাজ কমে যায়, ততটুকু টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রধান লক্ষনগুলো প্রত্যেক রোগের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

এটা কিভাবে নির্ণয় করা যায়?
ভাসকুলাইটিস ডায়াগনসিস করা সহজ নয়। লক্ষনগুলো অন্যান্য শিশু রোগের সাথে মিলে যায়। ডায়াগনসিস নির্ভর করে দক্ষতার সাথে রোগের লক্ষনগুলো খুজে বের করা, রক্ত এবং প্রস্্রাব পরীক্ষা এবং ইমেজিং পরীক্ষার উপর (আল্ট্রাসনোগ্রাফি, এক্সওে, সিটি এবং এম. আর. আই এবং এনজিওগ্রাফি), ডায়াগনসিস নিশ্চিত প্রমান করা হয় আক্রান্ত টিস্যু থেকে বায়োপিসি নিয়ে। যেহেতু রোগটি বিরল, সেজন্য যেখানে শিশু রিউমাটোলজি এবং অন্যান্য শিশু এবং ইমেজিং এক্সপটিদের কাছে রেফার করতে হয়।

এটা কি চিকিৎসা করা যায়।
হ্যঁ, আজকাল ভাসকুলাইটিস চিকিৎসা করা হয়, যদি জটিল রোগটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে চিকিৎসা পেলে রোগটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

চিকিৎসা কি কি আছে ?
প্রাথমিক ক্রনিক ভাসকুলাইটিস এর চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী এবং জটিল। এর প্রধান লক্ষ রোগটাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়ন্ত্রনে রাখা। (ইনডাকশন থেরাপী) এবং রোগ নিয়ন্ত্রণকে অনেকদিন ধরে রাখা মেইনটিনেন্স থেরাপী) এবং ওষুধের ক্ষতিকর দিকগুলো দুর করা। চিকিৎসা ব্যবস্থা রোগীর বয়স এবং রোগের লক্ষণের বিভিন্ন ধরনের হয়।
ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধের সাথে করটিকোস্টেরড দিলে রোগ দ্রুত রিমিশনে যায়।
মেইনটিনেন্স থেরাপী হিসাবে এজাথায়োপ্রিন, মিথোট্রিক্সেট, মাইকোফেনোলেট মফেটিল এবং স্বল্পমাত্রায় প্রেডনিসোলন ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য ওষুধ ও ব্যবহার করা হয় ইমিউনো সিস্টেম কে সাপ্রেস করতে এবং প্রদাহ কমাতে, এগুলো প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা, যখন সাধারন ওষুধগুলো রোগ কন্টোল করতে পারেনা, তখন এবেবারে নতুন বায়োলজিক্যাল এজেন্ট যেমন রিটুক্সিম্যার, কলকিচিন এবং থেলিজোমাইড ব্যবহার করা হয়।
দীর্ঘমেয়াদী করটিকোস্টেরয়েড, চিকিৎসা নিলে যে অসটিওপোরোসিস হয় তা প্রতিরোধ করা যায় পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম গ্রহনের মাধ্যমে। ওধুধপত্র যা রক্ত জমাটে বাধাদান করে যেমন অল্প ডোজের এসপিরিন অথবা রক্ত জমাট বাধাদানকারী, এবং উচ্চ রক্তচাপ নির্মূলকারী এজেন্ট ব্যবহার করা হয়।
মাসকিউলোস্কেলিটাল কাজকে উন্নত করার জন্য ফিজিওথেরাপী দেওয়া যেতে পারে, দীর্ঘমেয়াদী রোগ এবং তা মানিয়ে নেওয়ার জন্য পিতামাতা এবং পরিবারকে মানসিক এবং সামাজিক সহযোগিতা দেওয়া যায়।

অন্যান্য সহযোগী চিকিৎসা কি আছে?
অনেক ধরনের বিকল্প এবং সহযোগী চিকিৎসা আছে, এইসব চিকিৎসা দেওয়ার আগে ক্ষতিকর এবং উপকারী দিকগুলো ভাবতে হবে, এই গুলো শিশুর জন্য বোঝাস্বরূপ কিনা, এইসব চিকিৎসা দেওয়ার আগে শিশু রিউমাটোলজিস্ট এর সাথে পরামর্শ করতে হবে। কিছু চিকিৎসা গতানুগতিক ওষুধের সাথে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। হুট করে প্রেসক্রাইব ওষুধ বন্ধ করা ঠিক না। রোগ সচল থাকা অবস্থায় করটিকোস্টেরয়েড বন্ধ করা বিপদজনক। ওষুধ সম্পর্কে শিশু ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

চেক আপ
রেগুলার ফলোআপের মাধ্যমে আমরা রোগটার কার্যকারিতা বুঝতে পারি এবং চিকিৎসার ফল এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারি, এর মাধ্যমে আমরা শিশুকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে পারি। কতদিন পর পর এবং কিভাবে ফলোআপ করব তা নির্ভর করে রোগটার ভয়াবহতা কেমন এবং কি ধরনের ওষুধ ব্যবহার করছি তার উপর, রোগটা শুরুর দিকে বহিঃবির্ভাগের মাধ্যমে এবং জটিল রোগের ক্ষেত্রে ভর্তির মাধ্যমে চিকিৎসা করি। রোগটা কন্ট্রোল হয়ে গেলে ফলোআপ ও কমে যায়।
ভাসকুলাইটিস এর কার্যকারীতা বোঝার বিভিন্ন উপায় আছে। শিশুর অভিভাবককে জিজ্ঞেস করা হয় তার শিশুর কোনো পরিবর্তন হয়েছে কিনা এবং কোন ক্ষেত্রে প্র¯্রাব ডিপ স্টিক টেস্ট এবং রক্তচাপ মাপা হয়। পুরো শারীরিক পরীক্ষা এবং শিশুর সমস্যাগুলো পর্যালোচনা করে রোগটার কার্যকারিতা বোঝা যায়। রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষা করে প্রদাহর স্বরূপ, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের পরিববর্তন এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝা যায়। প্রত্যেকের কোন কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ জড়িত আছে তার উপর নির্ভর করে অন্যান্য পরীক্ষা এবং ইমেজিং করা হয়।

রোগটা কতদিন পর্যন্ত থাকতে পারে?
বিরল প্রহিমারী ভাসকুলাইটিস দীর্ঘমেয়াদী, মাঝে মাঝে সারাজীবন থাকতে পারে। তারা শুরু হতে পারে হঠাৎ করে, কখনও খুব খারাপভাবে এমন কি জীবন নাশকারী অবস্থা তৈরি হতে পারে এবং আস্তে আস্তে দীর্ঘমেয়াদী সামান্য রোগে পরিনত হয়।

দীর্ঘমেয়াদী প্রগনোসিস কি আছে?
বিরল প্রাইমারী ভাসকুলহিটিস এর প্রগনোসিস একেক জনের একেক রকম। এটা শুধুমাত্র কি ধরনের রক্তনালী এবং অঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর নির্ভর করেনা। কখন চিকিৎসা শুরু হয়েছে এবং প্রত্যেকের চিকিৎসার রেসপেন্স কেমন তার উপর নির্ভর করে। অঙ্গ, প্রত্যঙ্গ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করে রোগটা কতদিন সচল থাকে তার উপর। ভাইটাল অঙ্গে ক্ষতি সারাজীবন চলতে পারে। পর্যাপ্ত চিকিৎসার মাধ্যমে এক বছরের মধ্যে রোগটা রেমিশনে আসতে পারে। রেমিশন সারাজীবনের জন্য হতে পারে, কিন্তু এই জন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদী মেইনটেনেন্স থেরাপী। রোগটা মেমিশনে গেলেও আবার শুরু হতে পারে, এজন্য ইনটিনসিভ চিকিৎসার প্রয়োজন। চিকিৎসা না করলে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। যেহেতু রোগটা বিরল তাই দীর্ঘমেয়াদী রোগটার পরিণতি এবং মৃত্যুহার সম্পর্কে ডাটা জানা নাই।


নিত্যদিনের জীবন

রোগটা কিভাবে শিশুটার এবং তার পরিবারের প্রাত্যহিক জীবনে প্রভাব ফেলে?
শুরুর দিকে যখন শিশু অসুস্থ থাকে এবং রোগ নির্ণয় করা যায় না, তখন পরিবারের জন্য অনেক চাপের তৈরি হয়।
রোগটা এবং এর চিকিৎসা পদ্ধতি জানা থাকলে শিশু এবং তার পরিবারের লোকজনের অপ্রীতিকর ডায়াগনসিস এবং চিকিৎসা পদ্ধতি এবং বারবার হাসপাতালে যেতে হয়না। রোটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে বাড়ির এবং স্কুলের জীবন স্বাভাবিক হয়।

স্কুলের ব্যাপারে কি পরামর্শ?
একবার রোগটা নিয়ন্ত্রণে আসলে রোগীদেরকে দ্রুত স্কুলে যেতে উৎসাহিত করা হয়। শিশুটির রোগ সম্পর্কে স্কুলে জানিয়ে রাখতে হবে যাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।

খেলাধুলার ব্যাপারে কি পরামর্শ?
রোগটা নিয়ন্ত্রণে আসলে শিশুদের তাদের পছন্দের খেলাধুলায় অংশগ্রহন করতে বলা হয়।
সুপারিশসমূহ নির্ভর করে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, মাংসপেশী, গিরা এবং হাতের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে, এটা প্রভাবিত হয় পূর্বের করটিকোস্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে অনেকটা।

খাবার দাবার সম্পর্কে পরামর্শ কি?
এটা বলা যায়না যে বিশেষ কোন খাবার রোগটাকে প্রভাবিত করে। বাড়ন্ত শিশুকে স্বাস্থ্যকর, সুষম প্রোটিনযুক্ত এবং ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সমুদ্ধ খাবার দিতে হবে। যখন করটিকস্টোরয়েড চিকিৎসা পায়, মিষ্টি চর্বি এবং লবণাক্ত খাবার কম দিতে হবে করটিকস্টেরয়েড এর পার্শ¦প্রতিক্রিয়া কমানোর জন্য।

আবহাওয়া কি রোগটাকে প্রভাবিত করতে পারে?
আবহাওয়া রোগটাকে প্রভাবিত করেনা। রক্তপ্রবাহ কমে গেলে সাধারনত হাত এবং পায়ের আঙ্গুলে ভাসকুলাইটিস হলে ঠান্ডাতে গেলে লক্ষণ বেড়ে যেতে পারে।

সংক্রামন এবং টীকার ব্যাপারে পরামর্শ কি?
যারা ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা পায় তাদের ক্ষেত্রে কিছু সংক্রামক আরো ক্ষতি করে। জলবসন্তের সংস্পর্শে আসলে চিকিৎসককে সাথে সাথে জানাতে হবে এবং এন্টিভাইরাল ওষুধ অথবা এন্টিভাইরাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন নিতে হবে। সাধারন সংক্রমন এর সম্ভবনা ও বেড়ে যায়। কিছু বিরল সংক্রামন ও হতে পারে। উমিউনোসাপ্রেসিভ রোগীদের ক্ষেত্রে নিউমোসিসটিস দ্বারা জীবন নাশকারী সংক্রামন হতে পারে ফুসফুসে যেটা দীর্ঘমেয়াদী কো-ট্রাইমক্সজেল এন্টিবায়োটিক দ্বারা উপকৃত হয়।
জীবন্ত টীকা দান (যেমন-পেরোটাইটিস, মিসেলস, রুবেলা টিউবারকুলোসিস) কিছু দিন বন্ধ রাখতে হবে যারা ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ পায়।

যৌন জীবন, গর্ভাবস্থা এবং জন্ম নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে কি ঘটে?
বয়োঃসন্ধিকালে জন্মবিরতিকরন গুরুত্বপূর্ণ কারন বেশিরভাগ ওষুধ পেটের বাচ্চাকে ক্ষতি করতে পারে। কিছু সাইটেটিক্সিক ওষুধ যেমন সাইক্লোফসফামাইড) প্রজন্ন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এটা নির্ভর কার মোট (কুমুলেটিভ) কতটুকু ডোজ ওষুধ নেওয়া হয়েছে, কখন দেওয়া হয়েছে তার উপর নির্ভর করেনা।


পলিআরটেরাইটিস নডোসা

ইহা কি?
পলিআরটেরাইটিস নডোসা রক্তনালীর দেয়াল ক্ষতিকারক ভাসকুলাইটিস যা মাঝারি এবং ছোট রক্তনালীকে আক্রান্ত করে। অনেকগুলো রক্তনালী জায়গায় জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রদাহসৃষ্টিকারী রক্তনালীর দেয়াল দুর্বল হয়ে যায় এবং রক্তচাপের প্রবাহের ফলে ছোট নডিউল তৈরি হয় রক্তনালী বরাবর। এখানে থেকে নডোসা শব্দটির উৎপত্তি। চামড়ার পলিআরটেরহিটিস শুধুমাত্র চামড়া এব্ং মাংসপেশীকে (মাংস এবং গিরা) কে আক্রান্ত করে, ভিতরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হয়না।

এটা কেমন সাধারন?
প্যান খুবই বিরল শিশুদের মধ্যে প্রত্যেক বছর এক মিলিয়নে একজন আক্রান্ত হয়। এটা ছেলে এবং মেয়েকে সমানভাবে আক্রান্ত করে এবং সাধারনত ৯-১১ বছরের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা সাধারনত স্পোটোকক্কাল এবং হেপাটাইটিস বি এবং সি সংক্রমনে বেশি দেখা যায়।

প্রধান লক্ষনগুলো কি কি?
সাধারন লক্ষণগুলো হলো দীর্ঘমেয়াদী জ্বর, শরীর ব্যথা, দুর্বলতা এবং ওজন কমে যাওয়া।
বিভিন্ন লক্ষন নির্ভর করে কোন কোন অঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর। অপর্যাপ্ত রক্ত চলাচলের ফলে ব্যথা অনুভূত হয়। বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হল প্যান এর প্রধান লক্ষণ। শিশুদের ক্ষেত্রে মাংসপেশী এবং গিরার ব্যথার সাথে পেটে ব্যথা ও হয়, এটা হয় অন্ত্রে যেসব রক্তনালী প্রবাহিত হয় সেগুলো আক্রান্ত হলে, টেস্টিস এর রক্তনালী আক্রান্ত হলে অন্ডথলিতে ব্যথা হতে পারে। চামড়ার রোগ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, বিভিন্ন আকৃতির ব্যথাযুক্ত র‌্যাশ (দাগ দাগ র‌্যাশ বা পারপুরা অথবা বেগুনী আকৃতির জালির ন্যায় র‌্যাশ যাকে লিভিডো রেটিকুলারিশ বলে) ব্যাথাযুক্ত চামড়ার নডিউল হতে পারে, এমনটি ঘা এবং গ্যাংগ্রিন হতে হার পারে। (রক্তপ্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়ে আঙ্গুল, পায়ের আঙ্গুল, কান অথবা নাক ক্ষতিগ্রস্থ হয়) বৃক্ক আক্রান্ত হলে প্র¯্রাবে রক্ত এবং প্রোটিন আসতে পারে এবং রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। মস্তিষ্ক ও আক্রান্ত হতে পারে এবং শিশু খিচুনী, অবশতা এবং নানারকম মস্তিষ্কের সমস্যা নিয়ে আসতে পারে।
বেশি খারাপ ক্ষেত্রে অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। গবেষনাগারের পরীক্ষা করে রক্তে প্রদাহের নানা উপসর্গ এবং শ্বেতকনিকা এবং হিমোগ্লোবিন কম পেতে পারি। (রক্তশূণ্যতা)

এটা কিভাবে নির্ণয় করা যায়?
প্যান নির্ণয় করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী জ্বরের অন্যান্য কারন যেমন সংক্রামন আছে কিনা দেখতে হবে। সঠিকভাবে দীর্ঘমেয়াদী জ্বরের চিকিৎসা এন্টিবায়োটিক দ্বারা করার পরও যদি লক্ষনগুলো ভালো না হয়, সেক্ষেত্রে আমরা ধারনা করতে পারি। রোগ নির্ণয় আমরা সঠিকভাবে করতে পারি, রক্তনালীর পরিবর্তন (এনজিওগ্রাফির) মাধ্যমে অথবা টিস্যু বায়োপসির মাধ্যমে।
এনজিওগ্রাফি একটি রেডিওলজিক্যাল মেথড যেখানে আমরা সাধারন এক্সরে করে পারিনা, তা রক্তপ্রবাহের ভিতর বিশেষ এক ধরনের তরল দিয়ে দেখতে পাই। একে বলে কনভেনশনাল এনজিওগ্রাফি। কমপিউটেড টমোগ্রাফি ও ব্যবহার করা যায় (সিটি এনজিওগ্রাফি)

এর চিকিৎসা কি?
করটিকোস্টেরয়েড হলো শিশুদের প্যান এর প্রধান চিকিৎসা। এই ওষুধগুলো কিভাবে দেওয়া হবে (মাঝে মঝে সরাসরি রক্তনালীতে যখন রোগটা সচল থাকে, অথবা ট্যাবলেট আকারে) এবং ডোজ এবং কতদিন যাবৎ দেওয়া হবে তা নির্ভর করে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং তার ভয়াবহতার উপর। যখন রোগটা শুধুমাত্র চামড়া এবং মাংসপেশীতে থাকে তখন অন্যান্য ইমিউনো সাপ্রেসিভ ওষুধের প্রযোজন পাড়েনা। কিছু রোগটা যদি আরও খারাপ হয় এবং প্রযোজনীয় অঙ্গ আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে সচল রোগটা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য অন্যান্য ওষুধ যেমন সাইক্লোফসফামাইড দরকার হয়। (ইনডাকশন থেরাপী) আরো জটিল এবং যেটা চিকিৎসায় কাজ না হয়, সেক্ষেত্রে বায়োলজিক্যাল এজেন্ট ব্যবহার করা হয়, কিন্তু এর কার্যকারীতা বেশি জানা যায় নাই।
যখন রোগটা কমে আসে, তখন একে কন্ট্রোল করা হয় এজাথায়োপ্রিন, মিথোট্রেক্সেট অথবা মাইকোফেনোলেট মফেটিলের মাধ্যমে এবক বলে মেইনটেনেন্স থেরাপী।
যখন রোগটা কমে আস,ে তখন একে কন্ট্রোল করা হয় এজাথায়োপ্রনি, মথিোট্রক্সেটে অথবা মাইকোফনেোলটে মফটেলিরে মাধ্যমে এবক বলে মইেনটনেন্সে থরোপী।


টাকাইয়াসু আরটেরাইটিস

ইহা কি?
টাকাইয়াসু আরটেরাইটিস (টি এ) সাধারনত বড় আরটারী বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এওটা এবং এর শাখা প্রশাখা এবৎং ফুসফুসের আরটারী এবং শাখাকে আক্রান্ত করে। মাঝে মাঝে ‘গ্রানুলোমেটাস’ অথবা ‘বড় সেল’ ভাসকুলাইটিস বলে, অনুবীক্ষণ যন্ত্রে রক্তনালীর গায়ে বড় সেল এর পাশে ছোট নডিউলার লেসন দেখা যায়। কিছু লিটারেচারে এটাকে ‘পালসলেস ডিজিস’ বলে কিছু ক্ষেত্রে হাত পায়ের পালস অনুপস্থিত অথবা অসমান থাকে।

এটা কেমন সাধারন?
পৃথিবীজুড়ে টি এ মোটামুটি কমন কারন এটা যাদের সাদা চামড়া না (এশিয়ানদের) হয়। এটা ইউরোপিয়ানদের মধ্যে বিরল। মেয়ে বাচ্চ (বয়োঃসন্ধিকালে) ছেলে বাচ্চাদের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হয়।

এর লক্ষণগুলো কিকি?
প্রাথমিক লক্ষনগুলো হল জ্বর, ক্ষুধামান্দা, ওজন কমে যাওয়া, মাংসপেশী এবং গিরা ব্যথা, মাথা ব্যথা এবং রাতে ঘামা। ল্যাবরেটরী টেস্ট করলে প্রদাহসৃষ্টিকারী উপাদানগুলো বেড়ে যায়। যেহেতু আরটারির প্রদাহ বেডেই যায়, রক্তপ্রবাহ কমে যায়। প্রাথমিক লক্ষণগুলোর একটি হল রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া কারণ পেটের আরটারি আক্রান্ত হলে বৃক্কে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। হাতে পায়ের পালস পাওয়া যায় না, চার হাত পায়ের রক্তচাপের পার্থক্য হয়, সরু আরটারিতে স্টেথেসকোপ বসালে মারমার পাওয়া যায় এবং হাতে পায়ে প্রচন্ড ব্যথা হয়। মাথা ব্যথা, বিভিন্ন মস্তিষ্কের সমস্যা হতে পারে. কারন মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যায়।

এটা কিভাবে নির্ণয় করা যায়?
ডপলার পদ্ধতির মাধ্যমে (রক্ত প্রবাহের পরিমাপ) আল্ট্রাসনোগ্রাফ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রধান আরটেরিয়াল ট্রাঙ্ক য হৃৎপিন্ডের কাছাকাছি তা নির্ণয় করা যায়। যদিও এই পদ্ধতি দূরের আরটারি আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করতে পারেনা।
ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এম আর) করে রক্তনালীর উপাদান এবং রক্ত প্রবাহ (এম আর এনজিওগ্রাফি, এম আর এ) নির্ণয়ের মাধ্যমে বড় আরটারি যেমন এওটা এবং এর শাখা প্রশাখা দেখা যায়। ছোট আরটারি দেখার জন্য এক্সরে ইমেজিং ব্যবহার করা হয়। আবার কনভেনশনাল এনজিওগ্রাফির মাধ্যমে রক্তনালীর ভিতরটা দেখা যায়।
কমপিউটেড টমোগ্রাফি পদ্ধতিও ব্যবহার করা যায়। (সিটি এনজিওগ্রাফি) নিউক্লিয়ার মেডিসিন এক ধরনের পরীক্ষা করে যাকে বলে পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফি। (পেইট স্ক্যান) ভেইন এর ভিতর রেডিও আইসোটোপ ঢুকানো হয় এবং স্ক্যানারের মাধ্যমে রেকর্ড করা হয়। সচল প্রদাহসৃষ্টিকারী স্থানে রেডিও আইসোটোপ জমা হলে বোঝা যার কতটুকু আরটারি আক্রান্ত হয়েছে।

চিকিৎসা কি?
করটিকোস্টেরয়েড হল শিশুদের টি.এ. চিকিৎসার প্রধান পদ্ধতি। রোগটার বিস্তার এবং ভয়াবহতার উপর নির্ভর করে এর ব্যবহার পদ্ধতি, ডোজ এবং সময় নির্ধারন করা হয়। অন্যান্য এজেন্ট যা ইমিউনো সিস্টেমকে কমিয়ে রাখে এবং করটিকোস্টেরয়েড এর ডোজকে কমিয়ে আনে, সেগুলো ব্যবহার করা হয়। সাধারনত এজাথায়োপ্রিন, মিথোট্রেক্সেট, অথবা মাইকোফেনোলেট মফেটিল ব্যবহার করা হয়। বেশি খারাপ রোগের ক্ষেত্রে প্রথমে সাইক্লোফসফামাইড ব্যবহার করা হয়। (এজন্য ইনডাকশন থেরাপী বলা হয়)।
অন্যান্য চিকিৎসা যা ব্যক্তিবিশেষে ব্যবহার করা হয় যেমন রক্তনালীকে প্রসারিত করে ভেসোডাইলেটর) রক্তচাপ কমানোর ওষুধ, রক্ত জমাট বাধায় বাধাদানকারী ওষুধ (এসপিরিন) এবং ব্যথানাশক (এন এস আই ডি) ব্যবহার করা হয়।


৬. আনকা এসোসিয়েটেড ভাসকুলাইটিসঃ গ্রানুলোমেটোসিস উইথ পলিএনজাইটিস এবং মাইক্রোসকপিক পলিএনজাইটিস।

ইহা কি?
জি.পি.এ একটি ক্রনিক ভাসকুলাইটিস যেটা ছোট রক্তনালী এবং উপরের শ্বসনালী, ফুসফুস এবং কিডনীকে আক্রান্ত করে। গ্রানুলোমেটোসিস বলতে বোঝায় অনুবীক্ষনিক আকারের প্রদাহ জনিত ক্ষত যেটা রক্তনালীর চারপাশে ফয়েকস্তরের নডিউল তৈরি করে।
এম পি এ আরো ছোট রক্তনালীকে আক্রান্ত করে। এই দুই রোগে আনকা এন্টিবডি উপস্থিত থাকে। এ জন্য এদেরকে আনকা এসোসিয়েটেড ডিজিস বলে।

এটা কেমন সাধারন? শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে কি এই রোগের পার্থক্য আছে?
জি.পি.এ শিশুদের একটি বিরল রোগ। সত্যিকারের ফ্রিকোয়েন্সি জানা যায়নি, কিন্তু এক মিলিয়নে একজনের বেশি হবেনা। ৯৭% রোগই হয় সাদা চামড়ার (ককেশিয়ানদের) মধ্যে। শিশুদের মধ্যে ছেলে মেয়ে উভয়ই সমানভাবে আক্রান্ত হতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে মহিলাদের একটু বেশি হয়।

কি কি লক্ষন হতে পারে?
বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে সাইনাস কনজেসন নিয়ে আসে যা এন্টিবায়োটিক এবং ডিকনজেসটিন্ট দিয়ে ও ভালো হয়না। এর ফলে নাকের সেপটাম এর চামড়া উঠে যায়, রক্তপাত এবং ঘা হয়ে যায় যাকে বলে ‘সেডল নোস’।
শ্বসনালীর প্রদাহ ভোকাল কর্ডের নীচে ট্রাকিয়াকে সরু করে ফেলে এর ফলে খসখসে গলা এবং শ্বাসের সমস্যা হয়। প্রদাহসৃষ্টিকারী নডিউল ফুসফুসে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং বুকে ব্যথা তৈরি করে।
বৃক্ক আক্রান্ত হয় খুব কমসংখ্যক মানুয়েরই কিন্তু রোগ বাড়ার সাথে সাথে প্রস্্রাব এবং কিডনী ফাংশন টেস্ট এবনরমাল হয় সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপও দেখা দেয়। প্রদাহসৃষ্টিকারী টিস্যু জমা হয় চক্ষুকোটরে, ফলে সামনের দিকে ঠেলে দেয়, অথবা মধ্যকর্ণে জমা হয়ে অটাইটিস মিডিয়া তৈরি করে। চামড়া, মাংসপেশী এবং হাড়ের সমস্যা ছাড়া ও ওজন কমে যাওয়া, দুর্বলতা, রাতে ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি সাধারন উপসর্গ দেখা যায়।
এম পি এ তে বৃক্ক এবং ফুসফুস বেশি আক্রান্ত হয়।

এটা কিভাবে নির্নয় করা যায়?
শারীরিক সমস্যার মধ্যে উপর এবং নীচের শ্বাসনালীতে সাথে বৃক্কে সমস্যা তৈরি করে, এর ফলে প্র¯্রাবে প্রোটিন এবং রক্ত দেখা যায় এবং রক্তের ভিতর কিছু উপাদান যা বৃক্ক দিয়ে বের হয়ে যায়, ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়।
রক্ত পরীক্ষা করলে প্রদাহ সৃষ্টিকারী মারকার যেমন ইএসআর, সি আর পি এবং আনকা টাইটার বেড়ে যায়। টিস্যু বায়োপসি করেও আমরা বুঝতে পারি।

এর চিকিৎসা কি?
করটিকোস্টেরয়েড এবং সাইক্লোফসফামাইড হলো শিশুদের জিপিএ। এম পি এ এর ইনডাজশন চিকিৎসা। অন্যান্য এজেন্ট যেটা ইমিউনো সিস্টিমকে কমিয়ে রাখে রিটুক্সিম্যাব ও ব্যবহার করা যায় কারো ক্ষেত্রে যখন রোগটা কমে যায়, তখন মেইনটেনেন্স চিকিৎসা হিসাবে এজাথায়োপ্রিন, মিথোটেক্সেট অথবা মাইকোফেনোলেট মফেটিল ব্যবহার করা হয়।
অন্যান্য চিকিৎসার মধ্যে এন্টিবায়োটিক (দীর্ঘমেয়াদী কট্রাইমক্সাজেল) রক্তচাপ কমানোর ওষুধ, রক্ত জমাট বাধা রোধের ওষুধ (এসপিরিন) এবং ব্যথা নাশক হিসাবে এনএসআইডি ব্যবহার করা হয়।


মস্তিষ্কের প্রাইমারী এনজাইটিস

ইহা কি?
মস্তিষ্কের এনজাইটিস (পিএসিএসএস) হল শিশুদের মস্তিষ্কের এবং স্পাইনাল কার্ডের ছোট এবং মাঝারি রক্তনালীর প্রদাহ। এর আসল কারন জানা যায়নি, কিছু শিশুদের ক্ষেত্রে যদি পূর্বে চিকেনপক্স দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই সংক্রামন দ্বারা প্রদাহ হতে পারে।

এটা কেমন সাধারন?
এটা খুবই বিরল রোগ।

এর প্রধান লক্ষনগুলো কি?
এর শুরুটা খুব হঠাৎ করে হয়, এক সাইডের হাত এবং পা অবশ হয়ে যেতে পারে, খিচুনী অথবা প্রচন্ড মাথাব্যাথা হতে পারে। মাঝে মাঝে নিউরোলজিক্যাল অথবা মানসিক লক্ষণ যেমন আচরনগত সমস্যা হতে পারে। সিসটেমিক প্রদাহকারী যেমন জ্বর এবং রক্তে প্রদাহসৃষ্টিকারী মারকার সাধারত অনুপস্থিত থাকে।

এটা কিভাবে নির্ণয় করা যায়?
রক্ত পরীক্ষা এবং সিএসএফ ফ্লুইড এনালাইসিস নন স্পেসিফিক এবং অন্যান্য সংক্রামন, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং রক্ত জমাট বাধার কারন, দুর করার জন্য ব্যবহার করি। মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কার্ডের ইমেজিং করে আমরা রোগনির্ণয় করতে পারি। ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স এনজিওগ্রাফি (এম আর এ) এবং প্রথাগত এনজিওগ্রাফি (এক্সরে) করে আমরা মাঝারি এবং ছোট রক্তনালীর সমস্যা বুঝতে পারি। বারবার পরীক্ষা করে আমরা রোগ নির্ণয় করতে পারি। যখন ব্যাথ্যাহীন মস্তিষ্কের সমস্যা নির্ণয় করা যায়না, ছোট রক্তনালীর সমস্যা মনে করা যেতে পারে। এটা নিশ্চিত করা যায় মস্তিষ্কের বায়োপসি করে।

এর চিকিৎসা কি?
ভেরিসিলা রোগের পর হলে স্বল্পমেয়াদী ৩ মাসের করটিকোস্টেরয়েড দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারি। যদি দরকার হয় এন্টি ভাইরাল ওষুধ (এসাইক্লোভির) ব্যবহার করা যায়।এই করটিকেস্টেরয়েড চিকিৎসা শুধুমাত্র এনজিওগ্রাফি পজিটিভ নন প্রোগ্রেসিভ রোগীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য। যদি রোগটা বাড়তে থাকে, তাহলে ইমিউনোসাপ্রসিভ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। রোগের শুরুতে আমরা সাইক্লোফসফামাইড এবং তারপর মেইনটেনেন্স হিসাবে এজাথায়োপ্রিন এবং মাইকোফেনোলেট মফেটিল ব্যবহার করে। রক্ত জমাটে বাধাদানকারী ওষুধ ও (এসপিরিন) ব্যবহার করতে হবে।


অন্যান্য ভাসকুলাইটিস এবং এই টাইপের কন্ডিশন

কিউটেনিয়াস লিউকোসাইটোক্লাসটিক ভাসকুলাইটিস (একে হাইপারসেনসিটিভ ভাসকুলাইটিস অথবা এলাজিক ভাসকুলাইটিস বলে) একটা সেনসিটাইজিং সোস এর অপ্রয়োজনীয় রিয়াকশন এর ফলে রক্তনালী প্রদাহ কিছু ওষুধ এবং সংক্রামকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এটা হতে পারে। এটা সাধারনত ছোট রক্তনালীকে আক্রান্ত করে এবং নিদিষ্ট মাইক্্েরাসকপিক আকৃতি দেখা যায়। চামড়া থেকে বায়োপাস নিয়ে।

হ্ইাপোকমপ্লিমেনটেমক আরটিকেরিয়াল ভাসকুলাইটিস বলতে বোঝায় চুলকানি যুক্ত র‌্যাশ যা সাধারন আ্যলার্জিক র‌্যাশের মত সহজে ভালো হয়ে যায় না। এক্ষেত্রে রক্তের মধ্যে কমপ্লিমেন্ট লেভেল কম পাওয়া যায়।

ইউসিনোফিলিক পলিএনজাইটিস (যাকে পুর্বে চার্গস্ট্রাস সিনড্রোম বলা হত) শিশুদের খুব বিরল প্রজাতির ভাসকুলাইটিস, চামড়া এবং বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে বিভিন্ন উপসর্গ ছাড়াও সাথে এজমা এবং রক্তের শ্বেতকনিকার মধ্যে ইউসিনোফিল এর সংখ্যা বেশি পাওয়া যায়।

ব্যাচেট’স সিনড্রোম বিরল রোগ যেখানে চোখ এবং কানের ভিতর আক্রান্ত হয় সাথে আলোকভীতি, চোখ ঝাপসা এবং কানে শোনার সমস্যা হয়, সাথে ভাসকুলাইটিস এর উপসর্গ ও দেখা যায়।

ব্যাচেট’স ডিজিস সম্পর্কে আলাদা চ্যাপ্টারে আলোচনা করা হয়েছে।


 
সাহায্যকারী
This website uses cookies. By continuing to browse the website you are agreeing to our use of cookies. Learn more   Accept cookies